বাংলাদেশের কৃষিখাতে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়াতে উন্নয়ন অংশীদারদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন। শুক্রবার (১২-১০-২০১৮) যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দফতরে ৭৩তম সাধারণ পরিষদের আওতাধীন দ্বিতীয় কমিটির ‘কৃষি উন্নয়ন, খাদ্য নিরাপত্তা ও পুষ্টি’ বিষয়ক আলোচনায় বাংলাদেশের পক্ষে বক্তব্য দেন তিনি।
রাষ্ট্রদূত বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বের সুবাদে কৃষিখাতে যুগান্তকারী সাফল্য অর্জন করেছে বাংলাদেশ। এ সাফল্যের পেছনে রয়েছে কৃষিখাতে আমূল পরিবর্তন আনার লক্ষ্যে শেখ হাসিনা সরকারের সাহসী নীতিমালা গ্রহণ, গ্রামীণ উন্নয়নকে অগ্রাধিকার প্রদান, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে ক্ষমতায়িত করা এবং ক্ষুদ্র চাষি ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের সুরক্ষা প্রদানের মতো বিষয়গুলো।
দেশের কৃষিখাতের উন্নয়ন পরিক্রমা তুলে ধরে মাসুদ বলেন, বাংলাদেশ ১৯৭১ সালে সাড়ে সাত কোটি মানুষের জন্য মাত্র ১০ মিলিয়ন মেট্রিক টন চাল উৎপাদন ক্ষমতা নিয়ে যাত্রা শুরু করে। পরবর্তীতে জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে আবাদযোগ্য জমির হ্রাস, শিল্পখাতের সম্প্রসারণ এবং জলবায়ু পরিবর্তনের তীব্র প্রভাব মোকাবিলা করেও মাত্র ৮.৫ মিলিয়ন হেক্টর আবাদি জমি নিয়ে তিন গুণেরও বেশি অর্থাৎ ৩৪ মিলিয়ন মেট্রিক টন চাল উৎপাদন করছে। বৈশ্বিক অভ্যন্তরীণ মৎস্য উৎপাদন-২০১৮ অনুযায়ী বাংলাদেশ তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে। মাথাপিছু দৈনিক মাছের চাহিদা ৬০ গ্রাম হলেও বাংলাদেশ জোগান দিচ্ছে মাথাপিছু ৬২.৫৮ গ্রাম মাছ।
জিডিপিতে কৃষিখাতের অবদান ১৪.৭৫% উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত আরো বলেন, শেখ হাসিনা সরকার লাভজনক কৃষি, পুষ্টি ও খাদ্য নিরাপত্তা সুসংহত করার লক্ষ্যে ‘জাতীয় কৃষিনীতি-২০১৮’ প্রণয়ন করেছে। তিনি বলেন, সরকার কৃষকদের মাঝে সময়মতো কৃষি উপকরণ বিশেষ করে উচ্চ ফলনশীল বীজ, সার, সেচ সুবিধা ও কীটনাশক প্রদান করছে, যা আমাদের প্রতিশ্রুত এসডিজি-২ এর সফল বাস্তবায়নে কাক্সিক্ষত ভূমিকা রাখছে। এছাড়া কৃষি গবেষণা ও এর প্রযুক্তিগত উন্নয়নে বিনিয়োগ বৃদ্ধি করছে সরকার। তিনি সরকারের বিশেষায়িত প্রকল্প ‘একটি বাড়ি একটি খামার’ এবং কৃষি উদ্ভাবন বিশেষ করে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব ও লবণাক্ততা মোকাবিলায় সক্ষম ফসলের জাতের কথা উল্লেখ করেন। জনগণের পুষ্টি চাহিদা নিশ্চিত করতে সরকার ‘জাতীয় পুষ্টি কর্মপরিকল্পনা-২’ বাস্তবায়ন করছে বলে জানান স্থায়ী প্রতিনিধি।